সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৮:২৭ পূর্বাহ্ন
রায়হান আহমদ তরফদার
ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী মানুষের সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি আক্রমণে উত্তাল হয়ে উঠেছে গাজা উপত্যকা ও ইসরায়েলি ভূখণ্ড। এর প্রভাব পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও। সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভারথীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মতো বিশ্বনেতারা। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ জরুরি বৈঠক ডেকেছে। তবে মুসলিম দেশগুলোর অবস্থান কী হবে এই প্রশ্ন এখন সবার মনে। ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে পারস্পরিক উত্তেজনা নিয়মিত ঘটনা। তবে হামাসের এবারের হামলা ছিল একেবারে অতর্কিত। কোন ধরনের আগাম সতর্ক বার্তা পায়নি ইসরায়েল। হামাস ইসরায়েলে এক সাথে হাজার হাজার রকেট নিক্ষেপ করে এবং অনেক হামাস যোদ্ধা সীমানা পার হয়ে ইসরায়েলি বসতিতে আক্রমণ করে। এতে অনেক ইসরায়েলি নিহত হয় এবং অন্যদের বন্দী করা হয়। এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল তাৎক্ষণিকভাবে বিমান হামলা শুরু করে। বিশেষ করে হামাসের বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করে তারা এই বিমান হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করে। বিবিসি বলছে, এটি গাজা থেকে হামাসের পরিচালিত সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী অভিযান এবং ইসরায়েলের একটি প্রজন্ম কোনদিন তাদের দেশ এমন গুরুতর আক্রমণের শিকার হতে দেখেনি। হামাসের সশস্ত্র যোদ্ধারা গাজা-ইসরায়েলের সীমানার তারের বেড়া পার হয়ে ইসরায়েলি বসতির বিভিন্ন জায়গায় ঢুকে পড়ে। পঞ্চাশ বছর আগে ১৯৭৩ সালে মিশর ও সিরিয়া ইসরায়েলে এই ধরনের আচমকা হামলা চালায়। এ ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের যুদ্ধ লেগে যায়। ওই হামলার ৫০তম বার্ষিকীর একদিন পরে এই নজিরবিহীন আক্রমণ চালায় হামাস। হামলার এই তারিখটি হামাসের নেতারা একটি স্মরণীয় দিন হিসেবেই মনে রাখবেন।সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দিন দশক ধরে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে জুজুবুড়ির ভয়ের কথা বলে আসছেন। অসংখ্যবার তিনি ইরানে হামলার হুমকি দিয়েছেন।
সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি বলেন, তেহরানকে অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্য পারমাণবিক হুমকির মুখোমুখি হতে হবে। অবশ্য তাঁর কার্যালয় পরে সংশোধন করে বলে, বিশ্বাসযোগ্য সামরিক হুমকি। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্ভবত তাঁর সেই হুমকির বাস্তবরূপ দেখতে পাচ্ছেন। দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলার ভয়াবহ সেই দৃশ্যপট আরও বড় সংঘাতে জড়ানোর জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে প্রয়োজনীয় প্রেক্ষাপট ও আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাচ্ছে। এসবকিছুর মধ্যে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত- এই দুই ধরনের বাজিই রয়েছে।একটা আঞ্চলিক সংঘাতই কেবল হামাসের হামলা ঠেকাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হওয়ায় জবাব দিহির মুখে পড়ার হাতথেকে নেতানিয়াহুকে রক্ষা করতে পারে এবং তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে, তার বিচার অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করে রাখতে পারবে।একজন ব্যর্থ ও বিরোধীদের তোপের মুখে থাকা প্রধানমন্ত্রী থেকে রাতারাতি নেতানিয়াহু যুদ্ধকালীন নেতাতে পরিণত হয়েছেন। বিরোধী দলগুলো তাঁকে একটি জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনের আওয়াজ তুলছেন।নেতানিয়াহু যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন এবং হামাসের শক্ত ঘাঁটি গাজায় প্রতিশোধ নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মাত্রাতিরিক্ত জনবহুল গাজা উপত্যকায় ভয়ংকর বিমান হামলা শুরু করেছে। পাঁচ শতাধিক ফিলিস্তিন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি বাহিনী বড় ধরনের স্থল আগ্রাসনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যুদ্ধের পরবর্তী ধাপ কীহবে,সেটা বিস্তারিত করেননি নেতানিয়াহু। কিন্তু ইসরায়েলকে রক্ষায় তিনি যা করছেন এবং যা করবেন, তার প্রতি পশ্চিমা সরকার গুলোর শর্তহীন সমর্থন থাকবে। এই সমর্থন দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে।ইসরায়েলকে তারা আরও অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিচ্ছে।
পূর্ব ভূমধ্যসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে আধুনিক ও সবচেয়ে চৌকস বিমান বাহী রণতরী ফোর্ড এবং আরও কয়েকটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করার ঘোষণা দিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে শক্তি বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। এ সবকিছুই একটা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করার জন্য যথেষ্ট। বাইডেনের এই উত্তেজনাপূর্ণ সমরসজ্জার উদ্দেশ্য কী? বলা হচ্ছে, কৌশলগতভাবে বাধা দেওয়ার অভিপ্রায় থেকে বাইডেন এটা করেছেন। এর অর্থ হচ্ছে, ইসরায়েলের কোনো শত্রু যেন বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো সুযোগ খুঁজতে না পারে। কিন্তু ঐতিহাসিক সত্য হচ্ছে, ইসরায়েল কখনো তাদের ভূখণ্ডে কোনো বিদেশি পা ফেলুক, সেটা মেনে নেয় না। হামাসকে ধরার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজের প্রয়োজন নেই ইসরায়েলের। বাইডেনের এই সমরসজ্জার পেছনে রাজনৈতিক কারণও আছে। ইসরায়েলের ঘটনাবলি থেকে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি যেন কোনো ফায়দা তুলতে না পারে,সেটা নিশ্চিত করতে চান বাইডেন এরই মধ্যে রিপাবলিকানরা বলতে শুরু করেছেন, হামাসের হামলার সঙ্গে সম্প্রতি বাইডেন ৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়ের বিনিময়ে ইরানের সঙ্গে যে বন্দী মুক্তি চুক্তি করেছেন, তার ঘটনার সংযোগ আছে। কিন্তু নেতানিয়াহু এবং তাঁর ধর্মান্ধ মন্ত্রীদের মনে পুরোপুরি ভিন্ন কিছু থাকতে পারে। ইরানকে পেঁচিয়ে আরও বড় পরিসরে যুদ্ধ বাধানোর সুযোগ খুঁজতে চেষ্টা করতে পারেন তাঁরা। নেতানিয়াহু এরইমধ্যে হামাসের হামলায় সমর্থন জোগানো ও নির্দেশনা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ইরানের বিরুদ্ধে। ফিলিস্তিনিদের আগের সব হামলার ক্ষেত্রেও ইসরায়েল সেটা করেছে। ইসরায়েলি সমর্থক ও নব্যরক্ষণশীলেরা এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের গণমাধ্যমের বিশ্লেষকেরা এই হামলায় ইরানের সম্পৃক্ততা আছে বলে প্রচার শুরু করেছেন। স্থানীয় সূত্রের সাক্ষাৎ কারের বরাতে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল খবর প্রকাশ করেছে যে ইরানি কর্মকর্তা ও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডসের সেনারা কয়েক সপ্তাহ ধরে এই হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, হামাসের হামলায় তেহরানের সম্পৃক্ততার এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য-প্রমাণ তাঁরা পাননি। ইরানের দিক থেকে হামাসের হামলাকে ফিলিস্তিনিদের আত্মরক্ষার স্বতঃস্ফূর্ত পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে। কিন্তু ইসরায়েলের দুর্ভাগ্য, এ উচ্ছ্বাস ঢেকে রাখার কোনো চেষ্টা তারা করেনি। ইরান মনে করে, এই হামলা সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগে বাধা তৈরি করবে এবং ঘটনা চক্রে সেটা ভেস্তে যাবে। এরই মধ্যে ইরানের মিত্র লেবাননের হিজবুল্লাহ হামাসের অভিযানের প্রশংসা করেছে। তারা ইসরায়েলের অধিকৃত শেবা ফার্মস অঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত হয়েছে এবং হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল যদি গাজাতে প্রবেশ করে, তাহলে তারা বড় ধরনের সংঘাতে জড়িয়ে পড়বে। ইরান ও তার মিত্রদের হঠকারিতা বিপদ ডেকে আনতে পারে। ইসরায়েলের ঔদ্ধত্য যেমন তাদেরকে হামাস যোদ্ধাদের হাতে চূড়ান্ত পর্যুদস্ত হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করেছে। ইরান কিংবা ইসরায়েল কেউই ইতিহাস থেকে শেখেনি। তারা তাদের প্রক্সি সংঘাত অব্যাহত রেখেছে। যেটা একটি যুদ্ধের দিকে চলে যাচ্ছে। অনেক বছর ধরে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দাসংস্থাগুলো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে অন্তর্ঘাত চালিয়ে আসছে। তারা বিদেশে ইরানের সম্পদকে লক্ষ্যবস্তু বানায়। অন্যদিকে ইরান মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অনুগত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সমর্থন দেয়। এসব গোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মিত্রদের ওপর হামলা চালায়। যতই তর্জন-গর্জন করুক এবং বাহাদুরি দেখাক-যুক্তরাষ্ট্রের সবুজ সংকেত ও সমর্থন ছাড়া নেতানিয়াহু ইরানে হামলা করতে পারবেন না এবং করবেন না। কিন্তু বাইডেন প্রশাসনকে ছলে এই যুদ্ধে টেনে আনতে পারলে তা হবে নেতানিয়াহুর জন্য হবে গেম চেঞ্জার। ইরানকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার তাঁর যে আকাঙ্ক্ষা, সেটাকে বাস্তবরূপ দেওয়ার একেবারে মোক্ষম সুযোগ পাবেন তিনি।
২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে পর্যুদস্ত হয়ে সেনা প্রত্যাহারের পর ‘অনন্ত যুদ্ধ’ বন্ধের কথা চিন্তা করেছিলেন বাইডেন। ইরানের সঙ্গে ইসরায়েল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে সেটা হবে না। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর বাইডেন প্রশাসন চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পরাশক্তির প্রতিযোগিতার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, মধ্যপ্রাচ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়নি। বাইডেন নিজে চীন, রাশিয়া অথবা ইরানের কাছে মধ্যপ্রাচ্যকে ছেড়ে দিয়ে শূন্য হাতে ফিরে আসতে চান না।
হামাসের হামলায় তেহরানের ভূমিকা আছে, এ কথা বলে হামাসের কাছে বন্দী ইসরায়েলিদের মুক্তির ব্যাপারে চাপ তৈরি করতে চাইবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। বন্দীদের মুক্ত করে আনাই এখন নেতানিয়াহুর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। ইরান যদি এ ক্ষেত্রে অস্বীকৃতি জানায় এবং হিজবুল্লাহকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে শুরু করে, তাহলে বড় সংঘাতের ক্ষেত্র তৈরি হবে। নেতানিয়াহু ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ বাধাতে যুক্তরাষ্ট্রকে টেনে আনার ছক কষছেন। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, মার্কিন রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে যতই বিরোধ থাকুক না কেন, ইসরায়েল প্রশ্নে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট এই দুই শিবিরেই শর্তহীন সমর্থন রয়েছে। এটা স্মরণ করা গুরুত্বপূর্ণ যে ২০০৩ সালে ইরাক আগ্রাসন শুরুর আগের বাস্তবতা থেকে ২০২৩ সালের বাস্তবতা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং ও জটিল। ২০০৩ সালের আগ্রাসন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরাক দুই পক্ষের জন্যই ছিল ভয়াবহ। ইরানের বিরুদ্ধে সে ধরনের কোনো পুনরাবৃত্তি সবদিক বিবেচনায় হবে আরও শোচনীয়। তবে বিশ্ব শান্তির সম্ভাব্য পথ নিয়ে কাজ করতে নতুন করে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু করা দরকার। এই দুই রাষ্ট্রের সমাধানের জন্য নতুন করে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আন্তর্জাতিক কূটনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করা অপরিহার্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আঞ্চলিক শক্তিগুলি সহ মূল বৈশ্বিক অভিনেতাদের সম্পৃক্ততা আলোচনার অগ্রগতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এখন দরকার মূল কারণগুলিকে সম্বোধন করা যেমন: আঞ্চলিক বিরোধ, শরণার্থী অধিকার এবং নিরাপত্তা উদ্বেগের মতো সংঘাতের অন্তর্নিহিত কারণগুলি চিহ্নিত করা এবং মোকাবেলা করা, আস্থা তৈরি করতে এবং জড়িত পক্ষগুলির মধ্যে সংলাপ সহজতর করতে সহায়তা করা। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং অর্থনৈতিক সুযোগের অ্যাক্সেস সহ অভাবগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য শক্তিশালী মানবিক সহায়তা প্রদান, সম্প্রদায়ের মধ্যে দুর্ভোগ কমাতে এবং সদ্ভাব বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে। চরমপন্থা এবং সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সহযোগিতা মূলক প্রচেষ্টা অপরিহার্য যা সংঘাতের অভিযোগ কাজে লাগায়। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্বব্যাপী রেডিক্যালাইজেশন এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন প্রতিরোধ। আন্তর্জাতিক সংহতি কে উৎসাহিত করা এবং শান্তি, ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তার জন্য একটি অংশীদারি প্রতিশ্রুতি মেরুকরণ ভারসাম্যহীন করতে পারে এবং আলোচনা ও দ্বন্দ্ব সমাধানের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারে। সংঘাতের মানবিক ক্ষতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে আন্তর্জাতিক ভাবে সুশীল সমাজ, মিডিয়া এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা গুলির মধ্যে শান্তির পক্ষে ওকালতি করা ও শান্তি কে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য নেতাদের উপর চাপ প্রয়োগ করা। চলমান ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে বিশ্ব শান্তির দিকে নেভিগেট করার ক্ষেত্রে, এই গভীরভাবে জমে থাকা বিরোধের সমাধান এই অঞ্চলের সীমানা ছাড়িয়ে বহুদূর পর্যন্ত প্রসারিত তা স্বীকার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বৈশ্বিক নাগরিক হিসেবে, আমাদের শান্তির অন্বেষণে অটল থাকতে হবে, সংলাপ, বোঝাপড়া এবং দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার পক্ষে কথা বলতে হবে। এই দ্বন্দ্বের দ্বারা সৃষ্ট চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করার মাধ্যমে, আমরা কেবল আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় উন্নীত করি না বরং এমন একটি বিশ্বের বৃহত্তম আকাঙ্ক্ষায় অবদান রাখি যেখানে বিভাজন এবং সহিংসতার উপর দ্বন্দ্বের সমাধান এবং কূটনীতির জয় হয় এবং মানবতাকে আরও শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যায়। বিশ্বে শান্তি বিরাজ করুক এটাই হোক সবার প্রত্যাশা।
লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক